প্রিয়
শিল্পী আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণবার্ষিকীর
প্রাক্কালে, এমনই এক ভালো-লাগা গান, মনের
মধ্যে সুর-বাণী-ছন্দের
খেলা খেলে চলেছে অবিরাম!
রেকর্ডকৃত - ফেব্রুয়ারী,
১৯৫৮
গীতিকার - শ্যামল
গুপ্ত
সুরকার - ভি বালসারা
শিল্পী - কুমারী
আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়
(আকাশবাণী কলকাতার 'রম্যগীতি' অনুষ্ঠানের গান)
(আকাশবাণী কলকাতার 'রম্যগীতি' অনুষ্ঠানের গান)
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার,
যে আছে চেয়ে মোর
পানে,
জেনো দুটি নয়ন তার,
জ্যোছ্না
বিলাতে জানে।
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার!
পাপিয়া
তুমিও না শোনাও যদি
গান,
হবেনা
গানের বেলা তাও অবসান,
এ হৃদয় দেবে তো
ভরে,
সাথী মোর মিলন গানে।
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার!
যদি চাও বনের মুকুল,
যেও তুমি না হয়
ঝরে,
দু'জনার বরণমালা,
গাঁথা
হবে মনের ডোরে।
রজনী তুমিও যদি ভোর
হয়ে যাও,
এ মধুলগন যেন ফুরাবে
না তাও,
মরমের
ভুবনে তারে,
অনুরাগ
ফিরায়ে আনে।
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার!
এ সুরে কেমন যেন
একটা 'স্বপ্ন-স্বপ্ন' উপাদান
আছে - অবচেতনেই গুনগুনিয়ে ওঠে, নিজে থেকেই
- কোনো ভালো-লাগার মূহূর্তে! সুরের রেশটি, কি
সুন্দরভাবে ধরে রাখে বালসরাজির
পিয়ানোবাদন! মাঝেমাঝে মায়াভরা কন্ঠে একরাশ আবেগ
নিয়ে গেয়ে ওঠেন আলপনা
বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মুগ্ধতা, এই মায়াবী আবেশ,
বারবার পৌঁছে দেয় নস্টালজিয়ার
দোরগোড়ায়। সে
নস্টালজিয়ায় খানিক বাস্তবের নির্যাস,
বাকিটা মনের তুলিতে আঁকা,
কল্পনার রঙে রাঙানো - সে
এক একান্ত নিজস্ব অনুভূতি। এ
নস্টালজিয়ার স্রষ্টা ব্যক্তি শ্রোতাই!
(সঙ্গীত পরিবেশনরত আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়)
কলকাতা
হাসপাতালে, জীবনের অন্তিম লগ্নে,
আলপনাকে কাছে ডেকে, এ
গান শোনাতে বলেছিলেন বালসারাজি। গেয়ে
শুনিয়েছিলেন অশ্রুসিক্ত শিল্পী।
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার,
যে আছে চেয়ে মোর
পানে,
জেনো দুটি নয়ন তার,
জ্যোছ্না
বিলাতে জানে।
চাঁদ তুমি ঘুমাতে পার!
চাঁদ ঘুমিয়েছে। চাঁদের
মাধুর্যে গড়া যে চোখ
জ্যোৎস্না বিলায়, সে জেগে। সে
চোখ চিরন্তন। ছোট্ট
পাখি চন্দনার গান, চাঁপাকলির গন্ধ,
শালুকের দোদুলদুলের মধ্য দিয়ে সে
গীতিজ্যোৎস্না, আলপনা এঁকে যায়
আলোয়-ছায়ায় - আজও! আর দেখে সে চোখ - জ্যোৎস্না বিলায় - দেখে, জ্যোৎস্না বিলায় - আবার দেখে। এ দেখা অন্তহীন!